রৌদ্ররৃষ্টিরৌদ্ররৃষ্টিরৌদ্ররৃষ্টিরৌদ্ররৃষ্টিরৌদ্ররৃষ্টিরৌদ্ররৃষ্টিরৌদ্ররৃষ্টিরৌদ্ররৃষ্টিরৌদ্ররৃষ্টিরৌদ্ররৃষ্টিরৌদ্ররৃষ্টিরৌদ্ররৃষ্টিরৌদ্ররৃষ্টিরৌদ্ররৌদ্ররৃষ্টিরৌদ্ররৃষ্টি রৌদ্রবৃষ্টি রৌদ্রবৃষ্টি রোদ্রবৃষ্টি
   
 
  সন্ত্রাসী বাহিনী

নোয়াখালীর খাসজমির জটিলতা-৩

 

চরগুলোতে জমি দখল নিয়ে গড়ে উঠেছে অসংখ্য সন্ত্রাসী বাহিনী

মাহ্‌মুদুল হক ফয়েজ

খাসজমি ভূমিহীনদের অধিকারে থাকার কথা থাকলেও নোয়াখালী অঞ্চলের ভূমিহীনরা এই অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এই অধিকারের জন্য তারা জীবনব্যাপী লড়াই করে যাচ্ছে। কারো কারো এক জীবন শেষ হয়ে গেলেও লড়াই শেষ হয় না। উত্তরাধিকার সূত্রে কোনো সুবিধা না পেলেও ভূমিহীন মানুষের ভাগ্যে জোটে নানান বিড়ম্বনা। তাদের এই সংগ্রাম স্থানীয় জোতদার লাঠিয়াল বাহিনী, সন্ত্রাসী বাহিনী এবং বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে। এই ভূমিকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয় নানা জটিলতা। মামলা মোকদ্দমা চলে বংশ পরম্পরায়।
নোয়াখালীর উপকূল জুড়ে রয়েছে কৃষি খাসজমির এক মহাভান্ডার। পলিমাটি সমৃদ্ধ হয়ে যুক্ত হচ্ছে আরো নতুন নতুন ভূমি। ভূমিহীনরা সুষ্ঠুভাবে খাস জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য সংগ্রাম করে আসছে জীবনব্যাপী। যুগোপযোগী ভূমি সংস্কার নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণেই ভূমিকেন্দ্রিক জটিলতা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। খাসজমি বন্দোবস্ত সমস্যার মূলে রয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও প্রশাসনিক জটিলতা। যতদিন পর্যন্ত স্থানীয় প্রশাসন এ বলয় থেকে বের হয়ে নিরপে ভূমিকায় না আসবে ততদিন পর্যন্ত এ সমস্যা সমাধানের কোনো আভাস পাওয়া যাচ্ছে না।
নোয়াখালীর বয়ার চর : প্রতিনিয়ত রক্তাক্ত সংঘর্ষের নেপথ্যে
নোয়াখালী দেিণ মেঘনা মোহনা থেকে জেগে ওঠা এক বিশাল ভূখন্ড বয়ার চর। হত্যা সংঘর্ষ লুণ্ঠনের কারণে ইতিমধ্যে সমগ্র চরটি পরিণত হয়েছে মগের মুল্লুকে। ষাটের দশকে নোয়াখালী, সুধারাম ও লক্ষ্মীপুরের রামগতি সীমানা বরাবর দক্ষিণে হাতিয়া চ্যানেলে এ দ্বীপটি জেগে ওঠে। সে থেকে এর আয়তন প্রতিবছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে এই সীমানা পূর্ব-পশ্চিমে প্রায় পনের কিলোমিটার এবং উত্তর দক্ষিণে আট কিলোমিটার।
দ্বীপটি জেগে উঠলে স্থানীয় ভূমিহীন ও নদীভাঙ্গা মানুষদের মনে জেগে ওঠে বিপুল আশা। তারা নতুন ভূমি বন্দোবস্ত পাওয়ার আশায় দেখতে থাকে বিরাট স্বপ্ন। কিন্তু বন বিভাগ সত্তর দশকের মাঝামাঝি থেকে এ দ্বীপে বনায়ন শুরু করে। সাগরের ঝড় জলোচ্ছাস থেকে উপকূলবাসীকে রক্ষা ও নতুন ভূমি পোক্ত হওয়ার জন্য সরকারি নীতিমালায় ভূমি মন্ত্রাণালয় ও বন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে বন সৃষ্টির জন্য পঁচিশ বছরের চুক্তি হয়, সেই মোতাবেক বন বিভাগ সমগ্র বয়ার চরটি পঁচিশ বছরের জন্য লিজ নেয়। বস্তুত তখন থেকে ভূমিহীনদের জন্য বয়ারচর নিষিদ্ধ হয়ে পড়ে।
বনরার নাম করে বন বিভাগ ভূমিহীনদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করতে থাকে। এদিকে জোতদার ও বাথানিয়ারা গরু-মহিষ ও ভেড়ার চারণত্রে হিসেবে এ নতুন চরগুলো ব্যবহার করতো। বন সৃষ্টির সাথে সাথে তাদের সে ত্রেগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। খোয়াড়ে দিতে থাকে তাদের হাজার হাজার গরু মহিষ। ফলে স্থানীয় জনগণ ও ভূমিহীনরা বন বিভাগের ওপর চড়াও হতে শুরু করে। ধীরে ধীরে বয়ার চরে গহিন অরণ্যের সৃষ্টি হলে সন্ত্রাসীরা সঙ্গবদ্ধ হয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। শুরু হয় বন উজাড়। রামগতি অংশের টাঙ্গিরবাজার এলাকা থেকে এর শুরু।
মারাত্মক অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সন্ত্রাসীরা সৃষ্টি করে নানান বাহিনী। বন কেটে কেটে বসতি স্থাপন করার জন্য ভূমিহীনদের কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহ করে সৃষ্টি হয় নানান উপদল। চাঁদা আর জমি দখল নিয়ে নিজেদের মধ্যে শুরু হয় রক্তয়ী সংঘর্ষ। টাঙ্গিবাজারের কাছে বন বিভাগের বিট অফিস দখল করে এরা বন কর্মীদের সে এলাকা থেকে বিতাড়িত করে দেয়। বয়ার চর থেকে উচ্ছেদ হয়ে যায় বন বিভাগ। বন বিভাগ অভিযোগ করে প্রশাসনের কাছে সাহায্য চেয়েও বন বিভাগ তা পায়নি। ফলে কোটি কোটি টাকার সম্পদ হাতছাড়া হয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
সমগ্র বয়ার চরটি এখন হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য। প্রশাসনের অনুপস্থিতি ও নিষ্ক্রিয়তার ফলে এক একবার এক এক সন্ত্রাসীর কর্তৃত্বে চলে যায় দ্বীপটি। কখনো আজাদ চেয়ারম্যান, কখনো বাচ্চু চেয়ারম্যান, কখনোবা তাহের মুন্সী, জয়নাল হুজুর, জগলু, আইয়ুব আলী, কামাল সর্দার এখানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। বর্তমানে সর্বশেষ দ্বীপটি নিয়ন্ত্রন করছে সোলায়মান কমান্ডার। দ্বীপে এখন তার একচ্ছত্র আধিপত্য। এলাকা ভাগ করে সে এক এক বাহিনীর কাছে এক এক এলাকার দায়িত্ব দিচ্ছে। নৌ-ডাকাতি, হত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজে মধ্যযুগের নৃসংশতাকেও এরা হার মানায়।
২০০২ সালের এপ্রিলের ১০ তারিখে সোলায়মান কমান্ডার বাহিনীর সশস্ত্র হামলায় নিহত হয় ভূমিহীন এনামুল হক(৪০) এবং আহত হয় প্রায় শতাধিক ভূমিহীন। এসময় অসংখ্য বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়।
সমগ্র বয়ারচরটি সোলায়মান কমান্ডার নিয়ন্ত্রণ করলেও কিছু কিছু এলাকায় ভূমিহীনরা সংঘবদ্ধ হয়ে নিজেরাই নিজেদের এলাকা গড়ে তুলেছে। সোলায়মান কমান্ডারকে এরা দেন-দরবার করে নির্দিষ্ট অঙ্কের মাসোহারা দিয়ে আসছে। তার নিয়োজিত নির্দিষ্ট বাহিনী এসে ভূমিহীনদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা তুলে নেয়। এলাকাও নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। এদেরই একজন জলিল কমান্ডার। এক সময়ে সে আনছার বাহিনীতে কমান্ডার হিসেবে চাকরী করতো। সুধারামের চরমজিদ ঘাটের দণি-পূর্ব অংশে হাতিয়া চ্যানেলের পাশ দিয়ে আড়ইশ ভূমিহীন নিয়ে তার নিজস্ব এলাকা। তার মূল বাড়ি ছিলো হাতিয়ায়। বাড়ি-ঘর সহায়-সম্পত্তি মেঘনায় ভেঙ্গে যায়। পরে বয়ার চরে লোক বসতি শুরু হলে সে দেড় দু’শ ভূমিহীনসহ বাচ্চু চেয়ারম্যানের কাছে ধর্না দেয়। রেনু মেম্বারের মাধ্যমে প্রতিটি পরিবারের জন্য মাথাপিছু বারো’শ টাকা করে চাঁদা দিয়ে বয়ার চরের পূর্ব পাশে জায়গা নেয়। প্রতিটি পরিবারের জন্য  দুই একর করে জমি দেয়া হয়।
সরকারের ভুল নীতি, সিদ্ধান্তহীনতা, স্থানীয় প্রশাসনের অবহেলা ও উদাসীনতার কারণেই বিপুল সম্ভাবনাময় চরটি সন্ত্রাসীদের দখলে চলে গেছে। বয়ার চর নিয়ে প্রশাসন এবং বন বিভাগের মধ্যেও ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। বন বিভাগের সৃষ্ট শত শত কোটি টাকার গাছ উজাড় হয়ে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে বর্তমানে বয়ার চরে সত্তর আশি হাজার ভূমিহীন রয়েছে। দিন দিন এদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নাগরিক জীবনের সামান্য সুযোগগুলো তাদের কাছে পৌঁছেনি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত সন্তস্ত্র অবস্থায় তারা জীবন যাপন করছে।
সম্প্রতি বয়ার চরটি চর উন্নয়ন সংস্থা সিডিএসপি-র কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে এখনো কোনো প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
পলিপাটিসমৃদ্ধ বয়ার চর অত্যন্ত উর্বর এলাকা। এখানে ধান ছাড়াও নানারকম ফসল উৎপন্ন হচ্ছে। তাই বয়ার চরের প্রতিটি মানুষের দাবি সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে বাঁচার জন্য প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে সমগ্র চরকে নিয়ে আসা হোক। বয়ার চরের অগণিত ভূমিহীন বারবার আকুতি জানাচ্ছে ‘সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে আমাদের বাঁচান’। তারা মনে করে প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হলে সন্ত্রাসীদের কবল থেকে মুক্ত হবে বয়ার চর। 

চর নবগ্রামের জটিলতা
নোয়াখালী দক্ষিণে সুধারাম থানার একটি গ্রাম ‘নবগ্রাম’। স্বাধীনতার পূর্ব থেকে ধীরে ধীরে সমুদ্র বে এই এলাকাটি চর হিসেবে জেগে ওঠে। তখন এর নাম ছিল ‘ভাটির টেক’। আশির দশকে নবগ্রামকে একটি মৌজায় পরিণত করে সরকারিভাবে ‘নবগ্রাম’ নাম ঘোষণা করা হয়। এই মৌজায় জমির পরিমাণ ২৭৯৯ একর। ১৯৮৮-৯৯ সালে ভূমি সংস্কার বাছাই কমিটি ৭৭৩ জন ভূমিহীনকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করে। নবগ্রামের পুরো জমিকে সরকারি খাস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তখন কিছু দাবীদার এই জমি তাদের বয়ার দাবী জানিয়ে আদালতে মামলা করে। আদালত কাগজপত্র পর্যালোচনা করে কিছু জমি বয়ার মালিকদের নামে ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেয়। এদিকে জরিপ বিভাগ  পর্চা ম্যাপ করে জমি চিহ্নিত করে। পর্চা ম্যাপের ওপর খতিয়ান প্রদান করা হয় ৭০টি কবুলিয়ত। ৩০০ কবুলিয়ত রেজিস্ট্রেশন হয়। তৈরি অবস্থায় থেকে যায় ৩৫০টি। জমা বন্দী খাজনা সেলামি পর্যায়ে থাকে ৪৩টি। অন্যদিকে দেখা যায় এই জমিতে বয়ার দাবীদারদের নামে ১৭০টি খতিয়ান সৃষ্টি হয়। আদালতে চলতে থাকে মামলার পর মামলা। এই অবস্থায় ১৬০টি মামলা আদালতে বিচারাধীন থাকে।
চরের সার্বিক উন্নয়নের জন্য চর উন্নয়ন সংস্থা বা সিডিএসপি উক্ত কার্যক্রমের দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়। সিডিএসপি বিদেশী সাহায্যপুষ্ট সরকারি উন্নয়ন সংস্থা হিসাবে পরিচিত। সিডিএসপি একই জমির ওপর কার্যক্রম শুরু করে। শুরু হয় একই মঞ্চে ভিন্ন নাটকের মঞ্চায়ন। ১৯৯৬ সনে ওই জমির কোনোরূপ কাগজপত্র বাতিল না করে শুরু হয় পুনরায় বয়ার দাবী ও দখলদারিত্বের ভিত্তিতে জরিপ কার্যক্রম। কার্যক্রম পর্যায়ে নথি সৃষ্টি হয় ১৩৫৯টি। ৫ এপ্রিল ১৯৮৮ সনে ২৩৩টি নথি রেজিস্ট্রেশনের জন্য উপস্থাপিত হয়। এই একই জমিতে একদিকে বয়ার কাগজপত্র, ১৯৮৮-৯৯ সালের বন্দোবস্ত এবং সর্বশেষ ১৯৯৬ সালের সিডিএসপি কর্তৃক বন্দোবস্ত। এখন প্রশ্ন  উত্থাপিত হয় কোনটি ঠিক। প্রশাসন এভাবে একই জমির মালিক বানিয়ে দিচ্ছে ৩ জনকে। অথচ সিডিএসপি জরিপ করার পূর্বে আগের কোনো নথি বাতিল করেনি। তা হলে তিনভাবে তিন কাগজের মালিকই বৈধ! একই জমির তিন জন দাবিদার! কর্তৃপরে উদাসিনতা এবং সিদ্ধান্তহীনতায় ওই অঞ্চলের মানুষদের মধ্যে চলছে রক্তয়ী সংঘর্ষ, চলছে মামলা মোকদ্দমা। 

চর মজিদে ভূমিহীন ও মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘর্ষ
সুধারামের সর্বদক্ষিণে নতুন চর চর-মজিদ। এ চরটি জেগে উঠেছিলো ১৯৮৪/৮৫ সালে। সে চরে বসতি গড়ে দু’শতাধিক ভূমিহীন। ভূমিহীনরা নতুন চর আবাদী করে চাষাবাদ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তফসিল অফিস থেকে শস্য তিপূরণ রিসিপ্ট (ডিসিআর) কেটে যথাবিহিত ট্যাক্স দিয়ে জমিতে ধান চাষ করে আসছিলো। কিন্তু হঠাৎ করে ’৯৯ সালের নভেম্বরের শুরুতে ধান পাকার সময়ে ভূমিগ্রাসী লাঠিয়াল বাহিনী তাদের জমিতে হামলা করে। এ সময় লাঠিয়াল বাহিনী আটটি বাড়ি পুড়িয়ে দেয়। ঘরে ঘরে দিনব্যাপী ব্যাপক লুট ও অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে ৩০ জনকে মারাত্মক আহত করে। ভূমিহীনরা বলছে সমুদ্র থেকে নতুন জমি জাগলে তারা এ জমি চাষপোযোগী করে দীর্ঘদিন ধরে আবাদ করে আসছিল। তারা অভিযোগ করে অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও সে জমির ধান কেটে ঘরে তোলার পর এলাকার প্রভাবশালী জোতদাররা সে জমি বয়ার বাদী করে তাদের কাটা ধান লুট করে নিয়ে যায়।
এদিকে চর মজিদের ভূঁইয়ার ঘাটের পাশে মুক্তিযোদ্ধাদের বন্দোবস্তকৃত জমিতে এসে ভূমিহীনরা বসবাস করে চাষাবাদ করছে। ভূমিহীনরা সে জমি তাদের নিজেদের বলে দাবী করছে। এ নিয়ে গত ক’বছর ভূহিহীন ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বার কয়েক সংঘর্ষ হয়েছে। অনেক সালিশ দরবার করেও সে সমস্যার এখনো সমাধান হয়নি।
উপসংহার
গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, প্রতিবছরই এসব চরাঞ্চলে ২৫/৩০টি ছোট বড় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে আসছে। নোয়াখালীর দক্ষিণে সমুদ্র ও নদী থেকে জেগে উঠছে নতুন নতুন ভূমি। পলিমাটি বিধৌত এ জমিগুলো অত্যন্ত উর্বর। নদী ভাঙা নিঃস্ব  ভূমিহীনরা সে জমি চাষপোযোগী করে গড়ে তুলে আবাদ করে। সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী খাস কৃষি জমিগুলো ভূমিহীনদের পাওয়ার কথা। কিন্তু প্রশাসনিক দুর্নীতি ও জটিলতায় ভূমিগ্রাসী জোতদারদের দৌরাত্ম্যে বয়ার দাবীদার এবং চিংড়ী ঘের নির্মাণের নামে সে উর্বর জমিগুলো নানান কায়দায় জোতদার শ্রেণী দখল করে নিয়ে যাচ্ছে। ভূমিহীনরা অভিযোগ করেছে অনেক জমি সরকার থেকে বন্দোবস্ত পাওয়ার পরও নানান মিথ্যা জাল দলিল দিয়ে তাদের সে জমি দখল হয়ে গেছে।
নোয়াখালীর বিভিন্ন চরের জমিগুলো নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে প্রশাসনিক জটিলতা। আদালতগুলোতে বছরের পর বছর অনেক মামলা নিষ্পত্তিহীন অবস্থায় রয়েছে। ধান কাটার মৌসুমে চরাঞ্চলগুলো সহিংসতার উত্তপ্ত জনপদে পরিণত হয়। কোর্ট কাচারিতে মামলা মোকদ্দমার নথিও ভারী হতে থাকে। শুরু হয় দ্বন্দ্ব, মিথ্যা মামলা, সংঘর্ষ। দুই প মুখোমুখি হলেও মূল সসম্যা সৃষ্টিকারী প্রশাসন থাকে দূরে। অথচ মূল সমস্যা হলো প্রশাসনে। এদের পেছনে রয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও প্রশাসনিক জটিলতা। স্থানীয় প্রশাসন এই রাজনৈতিক প্রভাবশালী চক্রের বলয় থেকে বের হয়ে নিরপে ভূমিকায় আসলেই তবে খাস জমি নিয়ে এ ধরনের জটিলতা দূর হবে।




 

Mahmudul Huq Foez
 
আপনজন
 
ভালোবাসার একটি গোলাপ
সাতরাজারই ধন,
কোথায় খুঁজিস ওরে ক্ষেপা
এইতো আপন জন।
নীরবতা
 
নীরবে কেটেছে দিবস আমার
নীরবে কেটেছে রাত,
নীরবে হেনেছে হৃদয় আমার
প্রণয়ের অভিসম্পাত।
রঙ
 
রঙ দেখেছো রঙ ?
শাওন রাতের
নিকষ কালো
অন্ধকারের রঙ !
রঙ দেখেছো রঙ !
কমিউনিটি রেডিও’র অনুষ্ঠানের বিষয়বস্তু (content)
 
কমিউনিটি রেডিও’র অনুষ্ঠানের বিষয়বস্তু (content)
সম্পর্কে অংশগ্রহণমূলক জরিপ
মাহ্‌মুদুল হক ফয়েজ

উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী একটি দুর্যোগপূর্ণ অঞ্চল হিসাবে পরিচিত। নোয়াখালী সদরের প্রায় দুই তৃতীয়াংশই চর এলাকা। এখানে বাস করে সাধারন নিম্ন আয়ের মানুষ। তাদের অধিকাংশই কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। তাছাড়াও দিনমজুর, রিক্সাশ্রমিক, জেলে প্রভৃতি পেশার মানুষ এখানে বাস করে। খুব কমসংখ্যক নারি কৃষি সহ বিভিন্ন কাজ করলেও তারা মূলত ঘরকন্যার কাজ করে থাকে। ঘর কেন্দ্রিক নানান কাজের সঙ্গেও এরা জড়িত। এইসব নিম্ন আয়ের মানুষদের মধ্যে শিক্ষার হার খুব কম। জীবনযাপন সম্পর্কে সচেতনতাও এদের তেমন নেই। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় এরা বেশীরভাগ সময়ে সনাতন জ্ঞান, নিজস্ব ধারনা এবং আকাশের হাবভাব দেখে বুঝতে চেষ্টা করে। প্রায় ক্ষেত্রে এরা নিয়তির উপর নিজেদেরকে সমর্পন করে থাকে। তবে গত কয়েক বছরের বড় ধরনের ঝড় জলোচ্ছাস ও সাম্প্রতিক সিডরের কারনে এদের ভিতর কিছুটা সচেতনতা লক্ষ করা যাচ্ছে। এদের অধিকাংশের বাড়িতে রেডিও কিংবা টেলিভিশন নেই। তবে তারা স্থানীয় বিভিন্ন বাজারে রেডিও টেলিভিশন থেকে খবরাখবর পেয়ে থাকে।
গত পঞ্চাশ বছরের মধ্যে এ অঞ্চলে অনেক গুলো বড় বড় ঝড় জলোচ্ছাস গর্কী সহ বেশ কিছু প্রাকৃতিক দুর্যোগ বয়ে গিয়েছিলো। সে দুর্যোগ গুলোতে প্রচুর প্রাণহানি ও সম্পদের ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ‘৫৮.’৬০, ও ‘৭০ এর জলোচ্ছাস এ অঞ্চলে ব্যপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিলো। সে সময় এখানকার মানুষ কোনো মাধ্যম থেকে কেনো সংবাদই পেতোনা। সে সময়ের সরকার গুলোও ছিলো এব্যপারে একেবারেই উদাসীন।
নোয়াখালী সদরের সর্বদক্ষিনে হাতিয়া ষ্টিমার ঘাট ও অতিসম্প্রতি বয়ার চরের সর্বদক্ষিনে সমুদ্র উপকূলে ফেরী চলাচলের জন্য চেয়ারম্যান ঘাট নামক স্থানে বাংলাদেশ অভ্যন্তরিণ নৌপরিবহন সংস্থার একটি পল্টুন স্থাপিত হয়েছে । এখানে হাতিয়া দ্বীপ ও নোয়াখালীর মূল ভূখন্ডের মধ্যে ফেরি যোগাযোগ রয়েছে । এ এলাকায় মেঘনার মোহনায় প্রচুর সমুদ্রগামী মাছ ধরার ট্রলার ও ছোটছোট জেলে নৌকা এসে ভীড়ে থাকে । এই ফেরীঘাটের সুবাদে এখানে একটি জমজমাট বাজার গড়ে উঠেছে। এখানের অনেক জেলে জানিয়েছেন, তাদের অনেকেরই নিজস্ব কোনো রেডিও নেই। যারা চরের কাছাকাছি থেকে সাধারনত: মাছ ধরে থাকে। ছোট নৌকা নিয়ে তারা কখনো গভীর সমুদ্রে যায় না। কখনো কোনো দুর্যোগ দেখলে নদীর হাবভাব বুঝে সাবধানতা অবলম্বন করে। সারাদিন মাছ ধরা শেষে রাতে তারা চেয়ারম্যান ঘাটে কিংবা হাতিয়া ষ্টিমার ঘাটে আসলে লোকমুখে বিভিন্ন সংবাদ পেয়ে থাকে। নদীর কূলের এ বাজার গুলোতে এখন রেডিও তেমন শুনা হয়না। চা দোকান গুলোতে টেলিভিশন আছে । তাই সেখানে কাষ্টমারের ভীড় লেগে থাকে। যে দোকানে টেলিভিশন নেই সে দোকানে লোকজন তেমন যায় না। এসব দোকান গুলোতে বেশীর ভাগ সময় নাটক ও সিনেমা বেশী দেখা হয়। তবে দুর্যোগকালীন সময় সংবাদ বেশী দেখা হয়। এলাকার মানুষদের বদ্ধমূল ধারনা জন্মেছে যে, রেডিও টেলিভিশনে জাতীয় সংবাদ ছাড়া স্থানীয় সংবাদ প্রচারিত হয়না। তাই তারা খুব প্রয়োজনীয় তথ্য ও স্থানীয় সংবাদ গুলো লোকমারফত পেয়ে থাকে। তবে তা অনেক ক্ষেত্রে সঠিক হয়না। দুর্গম অঞ্চলের অনেক মানুষ জানিয়েছেন গত সিডরের সময় তারা লোকমুখে সংবাদ পেয়েছিলেন। সাগরের অবস্থা দেখে তারা সাগর থেকে ডাঙ্গায় চলে এসেছেন, তবে অনেকে উপরে সাগরের কাছাকাছি নিজেদের ঘরেই ছিলেন। অনেকেই নিজের বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যায়নি।
জরিপের বিশ্লেষন: কমিউনিটি রেডিও’র অনুষ্ঠানের বিষয়বস্তু (content) সম্পর্কে অংশগ্রহণমূলক জরিপ কার্য চালানোর সময় জানা গেছে, এরকম একটি সম্প্রচার কেন্দ্র সন্মন্ধে অনেকেরই ধারনা খুবই অস্পস্ট। এব্যপারে অনেকের কোনো রকম কোনো ধারনাই নেই। তবে বিষয়টি বুঝার পরে সবার মধ্যেই প্রচুর আগ্রহের সৃষ্টি হয়। তারা সকলেই মত দেন যে এরকম একটি কেন্দ্র এলাকায় খুবই প্রয়োজন।
নোয়াখালী জেলার সর্বদক্ষিনে সমুদ্র উপকূলের কয়েকটি এলাকায় মোট ২০জনের মধ্যে এ জরিপ চালানো হয়। এখানে মাত্র দুজনের রেডিও এবং মাত্র এক জনের নিজস্ব একটি ছোট্ট টেলিভিশন ও রেডিও রয়েছে। তাদের অবশ্য খবর তেমন শুনা হয়না। রেডিওতে গান এবং টেলিভিশনে নাটক দেখা ও গানশুনা বেশী হয়। নারিদের শুধু নাটক ও গানই শোনা হয়। তবে পুরুষরা মাঝে মাঝে খবর শুনে থাকে। নারিদের মধ্যে খবর শুনার আগ্রহ খুব কম। গত সিডরের সময় পুরুষরা ১০০ শতাংশই রেডিও কিংবা টেলিভিশনে খবর পেয়েছেন কিন্তু ১০০ শতাংশ নারি বলেছেন তারা তাদের স্বামী কিংবা লোকমারফত খবর পেয়েছেন। ৮০শতাংশ বলেছেন তারা ঝড়ের পূর্বাভাষ পেয়ে নিজেদের জায়গায়ই অবস্থান করেন। এর কারণ হিসাবে তাঁরা বলেন বাড়ির নিরাপত্তা ও আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা নেই। যেমন সেখানে কোথাও পানি বা বাথরুমের ব্যবস্থা নেই। এ নিয়ে বিশেষ করে মেয়েদের খুবই অসুবিধা পড়তে হয়। তাই অনেকেই সেখানে যেতে তেমন আগ্রহী হয়না। নিয়তির উপরও তারা অনেকাংশে নির্ভরশীল। ১০০ শতাংশ বলেছেন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়কালে তাঁরা আবহাওয়ার সংবাদ শুনতে চান। ১০০ শতাংশ বলেছেন তাদের অনুষ্ঠান দেখতে সবচেয়ে বেশী আগ্রহ নাটকের প্রতি । তবে বাংলা সিনেমার প্রতিও তাদের আগ্রহ রয়েছে।
১০০শতাংশ জানিয়েছেন, কমিউনিটি রেডিও স্থাপিত হলে শিক্ষার উপর সবচেয়ে বেশী অনুষ্ঠান প্রচার করা দরকার। ৭০ শতাংশ জানিয়েছেন আনন্দের মাধ্যমে শিশুদের শিক্ষা দেয়া উচিত। অন্য ৩০ শতাংশ জানিয়েছেন শাসন না করলে শিশুদের পড়াশুনা হয়না। তবে তারা এও জানিয়েছেন এর মাত্রা যেন অতিরিক্ত না হয়। এ বিষয়ে শিশুদের উপযোগী অনুষ্ঠান প্রচারের প্রয়োজনীয়তার কথা তারা জানিয়েছেন। ১০০ শতাংশ জানিয়েছেন বয়ো:সন্ধিকালীন সময়ে মেয়েদের সমস্যা বিষয়ক সচেতনতা মূলক অনুষ্ঠান বিশেষ ভাবে প্রচারের প্রয়োজন রয়েছে। সবাই মনে করেন এ ব্যপারে মেয়েরা এমন কি অভিভাবকরাও এ বিষয়ে তেমন সচেতন নন। এ নিয়ে সামাজিক ও পারিবারিক দ্বিধা কাজ করে। অনেকেই এ বিষয়ে কথা বলতে লজ্জা বোধ করেন। এথেকে মেয়েরা সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিষয়ে ১০০শতাংশ জানিয়েছেন মাতৃস্বাস্থ্য, শিশুস্বাস্থ্য, সাধারন রোগবালাই, ডায়রিয়া, খাদ্যে পুষ্টিমান, টিকা প্রভৃতি বিষয়ে সচেতনতা মুলক অনুষ্ঠান প্রচার করা দরকার। তবে মাত্র এক জন এইড্‌স বিষয়ে অনুষ্ঠান করার কথা জানিয়েছেন। বাসস্থান বিষয়ে ৭৫শতাংশ জানিয়েছেন, ভূমি ও ভূমির অধিকার বিষয়ে নানান অনুষ্ঠান প্রচার করা দরকার। অবশ্য এ ব্যপারে পুরুষরাই বেশী আগ্রহী। নোয়াখালীতে তাঁত শিল্পের তেমন কোনো প্রসার নেই। এবিষয়ে কারো তেমন কোনো আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়নি। তবে ১০০শতাংশই হস্তশিল্প ও নারিদের অর্থনৈতিক কার্যকলাপে সম্পৃক্ততার বিষয়ে অনুষ্ঠান প্রচার করার কথা বলেছেন। একজন মন্তব্য করেন এক সময় নোয়াখালীতে প্রচুর তাঁতের প্রসার ছিলো । কিন্তু কালের গর্ভে তা এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। জেলার বিভিন্ন জায়গায় স্থানে স্থানে যুগীপাড়া ছিলো। সেখানে লুঙ্গি গামছা শাড়ি এসব স্থানীয় ভাবে তৈরী হতো। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও এগুলো বাইরের জেলা গুলোতে চালান হতো। কমিউনিটি রেডিওর মাধ্যমে সচেতনতা জাগিয়ে তুলতে পারলে সেগুলো হয়তো আবার চালু হবে। আশা করা যায় এ থেকে তখন হয়তো এ এলাকার অনেক উন্নতি সাধিত হবে।
১০০শতাংশ জানিয়েছেন কৃষিঋণ, সার, বীজ, উচ্চফলনশীল ধানের আবাদ, হাঁস মুরগি পালন, কীটনাশক ছাড়া সব্জী চাষ, খাদ্যে পুষ্টিমান ইত্যাদি বিষয়ে অনুষ্ঠান প্রচার করা প্রয়োজন।
১০০শতাংশ জানিয়েছেন অনুষ্ঠান প্রচারের মাধ্যম হওয়া উচিত নাটক, কথিকা, জীবন্তিকা ইত্যাদির মাধ্যমে। এরা আরো জানিয়েছেন স্থানীয় ভাষায় অনুষ্ঠান প্রচারিত হলে সবার কাছে তা গ্রহনযোগ্য হবে। এছাড়াও স্থানীয় ভাষায় নাটক, গান এবং স্থানীয় সমস্যা ও সমাধান ইত্যাদি বেশী বেশী প্রচার হওয়া দরকার বলে সবাই জানিয়েছেন।
উপসংহার:- সার্বিক জরিপে দেখা যায় এ এলাকার জন্য কমিউনিটি রেডিওর অত্যন্ত প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। দুর্গম এ অঞ্চলের মানুষ কাছের খবরটিও সঠিক ভাবে পায়না। কথায় কথায এলাকাবাসী জানায়, ‘‍ইরােক েবামায় মানুষ মরার খবর আমরা সাথে সাথে রেডিও টেলিভিশনে পাই কিন্তু পাশের গ্রামে মড়ক লেগে হাঁসমুরগী মারা গেলে আমরা তার খবর পাইনা‍ অথচ এটি আমাদের জন্য অধিকতর জরুরী’। এখানে এটি স্থাপিত হলে শুধু দুর্যোগকালীন সময়েই নয়, এ কেন্দ্র গ্রামীণ জনগণের সার্বক্ষনিক দিনযাপনের অনুসঙ্গ হয়ে থাকেব। স্থানীয় ভাষায় স্থানীয় আঙ্গিকে স্থানীয় সমস্যাদি বিষয়ে অনুষ্ঠান প্রচারিত হলে এটি জনগনের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করবে এবং অধিক গ্রহনযোগ্যতা পাবে। এলাকায় সচেতনতা বাড়বে। উপকৃত হবে প্রান্তিক মানুষ।

মাহ্‌মুদুল হক ফয়েজ
ফ্রি-ল্যান্স সাংবাদিক
মোবাইল: ০১৭১১২২৩৩৯৯
e-mail: mhfoez@gmail.com

Mail to : massline@bangla.net
masslinemediacenter@yahoo.com



 
সকল সত্ব সংরক্ষিত সকল সত্ব সংরক্ষিত সকল সত্ব সংরক্ষিত This website was created for free with Own-Free-Website.com. Would you also like to have your own website?
Sign up for free